বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

সংগীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই

সংগীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই

বিনোদন ডেস্ক: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আমাদের থেকেও সংগীতের বড় ব্যক্তিত্ব ছিলেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস’র উদ্ভোধনী আসরে রিহার্সালের সময় মাথা ঘুরে ও পড়ে যায়। সেই থেকে ও অসুস্থ।’

ক্ষোভ নিয়ে গণসংগীতের এই শিল্পী আরও বলেন, ‘তার মতো একুশে পদকপ্রাপ্ত একজন সংগীতশিল্পী কেন সুচিকিৎসার অভাবে মরতে হলো? মাত্র একদিন আগে ও আইসিইউ পেয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হয়নি। এতো বড় মাপের একজন শিল্পীর বেলায় এমনটা কেন হলো?’

পারিবারিক সূত্রের জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল বুকে ব্যথা অনুভব হলে মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হয় ইন্দ্রমোহন রাজবংশীকে। সেখানে করোনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এছাড়া তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মৃত্যুকালে স্ত্রী দীপ্তি রাজবংশী, পুত্র রবীন রাজবংশী ও মেয়ে প্রবাসীকে রেখে গেছেন। তারা নিজেরাও লোকগানের সঙ্গে জড়িত। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের লোকগানের বিকাশে একুশে পদকপ্রাপ্ত এ গুণী শিল্পীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মূলত লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি শুরুর জীবনে ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গান গেয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন গ্রাম-বাংলায়। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান গেয়ে নিজেকে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

দীর্ঘদিন সংগীত কলেজে লোকসংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। তিনি বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭১ সালে তিনি সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ে ভিন্ন নামে দোভাষীর কাজ করতে হয় ক’দিন। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে তিনি যুক্ত হন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।

গান লেখা, সুর করা ও গাওয়া ছাড়াও লোকগান সংগ্রহ করতেন তিনি। গত ৫০ বছরে এক হাজার কবির লেখা কয়েক লাখ গান সংগ্রহ করেছেন রাজবংশী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877